আব্দুল করিমঃ সোনারগাঁয়ে ভূমি মালিকদের ভূমি জটিলতা নিয়ে ভোগান্তির শেষ নেই। ভূমি জটিলতা নিরসনে বছরের পর বছর তারা ঘোরেন সরকারি অফিস, আদালতে। তবুও শেষ হচ্ছে না এ সংকট। সর্বপুরি ভোগান্তির শিকলে বন্দি তারা।
সোনারগাঁ উপজেলায় এ সংকট বহুদিনের। এলাকাবাসীসহ ভুক্তভোগীরা জানান, হাজার হাজার মানুষ ভূমি (জমি) জটিলতা নিয়ে সংশ্লিষ্ট অফিস ও বিভিন্ন সরকারি অফিস আদালতে ঘোরেন। কারও ভোগান্তি মিস কেস, নামজারি-সীমানা নির্ধারণ নিয়ে। কেউ কেউ পর্চা সার্টিফাই কপি পেতেও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ভূমি মালিকরা রেকর্ড অফিস থেকে পর্চা সার্টিফাই কপি তুলতে গেলে অনেকের পর্চা ভলিউম ছেঁড়া থাকে। ওই পর্চা দিয়ে কোনো কাজ হয় না। এতে বিড়ম্বনা ও ভোগান্তিতে পড়েন ভূমি মালিকরা।
সার্টিফাই কপি সংগ্রহ করতেও ভোগান্তির শেষ নেই। কখনো কখনো ভলিউম খুঁজে পাওয়া যায় না, কখনো থাকে ছেড়া। নানা সমস্যার কারণে একটি সার্টিফাই কপি সংগ্রহ করতে গেলেও মাসের পর মাস ঘুরতে হয় ভূমি মালিকদের।
মিস কেস আবেদন করা মানেই ভোগান্তি মাথায় নেওয়া। একজন ভূমি মালিক বাদী হয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে মিস কেস করেন। পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্থানীয় ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দিতে বলেন। সেই মিস কেসের বাদী ও বিবাদীকে নোটিশ করে ভূমি অফিসে শুনানি করেন। সেখানেও বেশ কিছুদিন সময় কেটে যায়। ভূমি অফিস থেকে আবার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর প্রতিবেদন পাঠানো হয়। সেখানে শুনানি চলতে থাকে। অনেক ক্ষেত্রেই বিবাদীপক্ষ তাদের জমির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না দিয়ে শুনানির সময় বাড়ানোর আবেদন করেন বার বার। এভাবেই মিস কেস চলতে থাকে বছরের পর বছর এভাবেই ভোগান্তির শিকলে বন্দি সাধারণ মানুষ ।
আর এসব জমি নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করলেও কয়েক বছর সময় লেগে যায়। ভূমির এসব জটিলতা নিয়ে বছরের পর বছর ভোগান্তির শিকলে বন্দি থাকে হাজার হাজার মানুষ।
ভূমি মালিকদের দাবি, অল্প সময়ের মধ্যে শুনানির মাধ্যমে মিস কেস শেষ করলে মানুষ ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতো। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ভূমির বিভিন্ন জটিলতা অল্প সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করার দাবি সোনারগাঁবাসীর ।
বাবার ক্রয় ও মায়ের ওয়ারিশ সূত্রে জমির মালিক হন হাবিবপুর এলাকার বাসিন্দা মতিন মিয়া। পরে ওয়ারিশ সূত্রে তিনি জমির মালিক। ২০২০ সালে সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে তিনি ওই জমি নিয়ে মিস কেস করেন। প্রায় তিন বছর ধরে তার মিস কেস চলমান। কিন্তু বিবাদী পক্ষ কোনো কাগজপত্র দাখিল না করে শুধু সময় বাড়ানোর আবেদন করে যাচ্ছে। এভাবে কয়েক বছর ধরে শুনানি চলছে। এতে বিভিন্নভাবে তার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে বাড়ছে ভোগান্তি।
এ ব্যাপারে সোনারগায়েঁর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ ইব্রাহিম এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. এইচ এম সালাহউদ্দিন মঞ্জুর জানান, ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি।